গত বছরের ২৪ জুলাই, বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি রক্তাক্ত দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই দিনে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার, পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর চোখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হন। তাদের অভিযোগ, অজ্ঞাত কয়েকজন তাদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে এবং আন্দোলন শেষ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছে।
এই দিনেই, নারায়ণগঞ্জে গুলিতে আহত হয়ে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যায় ছয় বছরের শিশু রিয়া গোপ। ১৯ জুলাই, বাড়ির ছাদে খেলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলি তার মাথায় বিদ্ধ হয়।
২৪ জুলাইয়ের ঘটনাবলী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সরকার তখন আন্দোলন দমনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যার মধ্যে গুলি চালানো এবং গুম-নির্যাতন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এদিন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের জন্য ছাত্রদের দায়ী করেন, দাবি করেন যে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে। জাতিসংঘের লোগো-সংবলিত যান ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলে, আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এগুলো জাতিসংঘের শান্তিমিশনে ভাড়া দেয়া হয়েছিল, লোগো ভুলে মোছা হয়নি।’
ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ‘সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করেনি, ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে।’ এই পরিস্থিতিতে সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি সরাতে তৎপর ছিল।
২৪ জুলাইয়ের এই ঘটনাবলী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়।