এস কে সিনহার ১১ বছরের কারাদণ্ড

অর্থনীতি সর্বশেষ খবর

নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।

দুদক জানায়, তারা ফার্মার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে ২ ব্যবসায়ী শাহজাহান ও নিরঞ্জনের ভুয়া নথি ব্যবহার করে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে। পরবর্তীতে আত্মসাৎ করা টাকা বিচারপতি এস কে সিনহার অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত বাকি ১০ জন হলেন— এ কে এম শামীম, গাজী সালাহউদ্দিন, স্বপন কুমার রায়, মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মোহাম্মদ শাহজাহান, নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, সাফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, রণজিৎ চন্দ্র সাহা, সান্ত্রী রায় ও মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহীনুর রহমান বলেন, দীর্ঘ দিন ট্রায়াল শেষে আজ রায় ঘোষণা হলো। আদালত ১১ জন আসামির মধ্যে ২ জনকে খালাস দিয়েছেন। শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ছিলেন গ্রাহক, তারা ঋণের জন্য দরখাস্ত করেছিলেন। বাকি যারা আছেন, তাদের সবাইকেই আদালত সাজা দিয়েছেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ৭ বছর এবং দুর্নীতি দমন আইনে ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ব্যাংকারদের মধ্যে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা অনুযায়ী ৩ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, আমরা আদালতকে বলেছি ঋণ নীতিমালা ভাঙা হয়নি। ইতোমধ্যে ঋণ সমন্বয় হয়ে গেছে। আজ ২ জন গ্রাহককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তারা কেউ ভুয়া নন। যে উদ্দেশ্যেই ঋণ দেওয়া হোক না কেন, যেহেতু সিংহভাগ টাকা রিকোভার হয়ে গেছে তার অর্থ হলো এখানে অবৈধভাবে কিছু করা হয়নি। যে পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ সম্পদ সিকিউরিটি হিসেবে রাখা আছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, আমরা নিশ্চয়ই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো। রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য অপেক্ষা করবো, তারপর উচ্চ আদালতের দারস্থ হবো।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে এই মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। গত বছরের ১৩ আগস্ট এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে বিচারকার্য শুরু হয়। ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এ বদলির আদেশ দিয়েছিলেন।

২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে ঢাকায় সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দায়ের করেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *