উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমান F-7 নিয়ে জানা গেল চাঞ্চল্যকর তথ্য

সারাদেশ

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে চীনের তৈরি চেংদু এফ সেভেন বিজিআই একটি বহু পরিচিত যুদ্ধ বিমান। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিখ্যাত মিক 21 ফাইটার জেডের এই আধুনিকৃত সংস্করণটি মূলত একটি ইন্টারসেপ্টর হিসেবে ডিজাইন করা হলেও এর উন্নত সক্ষমতায় একে মাল্টিরোল ভূমিকা পালনে সক্ষম করে তুলেছে। এফ সে বিজিআই মূলত একটি তৃতীয় প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান। তবে কিছু আধুনিক বৈশিষ্ট্য এটিকে চতুর্থ প্রজন্মের বিমানের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। এফ সেভেন বিজিআই যুদ্ধবিমানকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য একটি সাশ্রয়ী বহু ভূমিকা যুদ্ধবিমান হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছে।

এটি আকাশ থেকে আকাশে স্বল্পপাল্লার ইনফ্রারড হোমিং মিসাইল এবং লেজার গাইডেড ও জিপিএস গাইডেড বোমা দিয়ে ভূমি আক্রমণে সক্ষম। এর গতি ম্যাক্স 2.2 এবং পাঁচটি হার্ট পয়েন্ট রয়েছে। এই যুদ্ধবিমানটিকে মিক 21 যুদ্ধবিমানের বেশিরভাগ সংস্করণের চেয়ে বিশ্লেষকেরা অধিক কৌশলী বলে মনে করলেও তাদের ভাষ্য এটি কয়েক দশক পুরনো ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। তাই আকাশে এ ধরনের যুদ্ধবিমানগুলো অবিশ্বস্ত প্রমাণিত হয়েছে এবং এদের কার্যক্ষমতা আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে বেশ সীমিত বলেও মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই যুদ্ধবিমান বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনারও শিকার হয়েছে। ২০০৮ সালের ৮ এপ্রিল টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে একটি এফ সেভেন বিমান বিধ্বস্ত হলে নিহত হন স্কোয়াড্রন লিডার মরশেদ হাসান। ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর টাঙ্গাইলের মধুপুরে এফ সেভেন বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দিপু প্রাণ হারান। বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, পাকিস্তান, ইরান, জিম্বাবুয়ে, নাম্বিয়াতেও এই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের নজির রয়েছে।

২০১০-১১ অর্থবছরে বাংলাদেশ চীনের সাথে এক স্কোয়াড জোন অর্থাৎ ১৬টি এফ৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করে, যার সরবরাহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ২০১৩ সালে। এই যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের মোট মূল্য ১৮৮৩ কোটি টাকা বলে জানা যায়। যদিও শুধু এফ৭ বিজিআই বিমানের নির্দিষ্ট খরচ আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়নি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বর্তমানে জেএফ৭ থান্ডার বা জে১০ সি এর মত নতুন যুদ্ধবিমান কেনার কথা বিবেচনা করছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে এফ সেভেন সিরিজকে সম্ভবত সামনে সারির যুদ্ধ ভূমিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে অদূর ভবিষ্যতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *