ইরানের রাজধানী তেহরানে আবারও বিস্ফোরণের শব্দে সকাল শুরু হয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) ভোরে শহরের পশ্চিমাঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। এই ঘটনার পরপরই আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইন্স তেহরানগামী সব ফ্লাইট বাতিলের সময়সীমা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
দুবাইভিত্তিক এই সংস্থার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি বিবেচনায়, ইরানে তাদের ফ্লাইট স্থগিতের সিদ্ধান্ত ৫ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ, অন্তত আগামী এক সপ্তাহ ইরানের আকাশে এমিরেটসের কোনো বিমান চলাচল করবে না।
তবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১ জুলাই থেকে বাগদাদ এবং ২ জুলাই থেকে বসরার ফ্লাইট পুনরায় চালু করা হবে।
এমিরেটসের মতো একটি আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এয়ারলাইন্সের এমন সিদ্ধান্ত ইরানের আন্তর্জাতিক যাতায়াতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। দেশি-বিদেশি বহু যাত্রী, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপগামী যাত্রীরা এই সংস্থার ওপর নির্ভর করে থাকেন।
এরই মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির এক নিঃশ্বাসে, তেহরানে ফের একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। ইরানের ইসলামশহর এলাকায় আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করে শত্রু হুমকি মোকাবিলার চেষ্টা চালানো হয়। স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা জানান, আকাশে অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট গান গর্জন করতে দেখা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিস্ফোরণস্থল বিদগানে একটি সামরিক ঘাঁটি ও ক্ষেপণাস্ত্র স্টেশন হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল ১২ দিনের সীমিত যুদ্ধ চলাকালীন এই এলাকাটি ইসরায়েলি ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল।
এরপরই আবার নতুন করে এই বিস্ফোরণ যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া একটি রকেট বাতাসে সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। তারা দাবি করেছে, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে হুমকির জবাব দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট হচ্ছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনা এখনো পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি। যুদ্ধ থেমেছে ঠিকই, কিন্তু যুদ্ধের ছায়া এখনো আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে।