আ. লীগ কার্যালয়ের মলমূত্র কেন পরিস্কার করছে জুলাই যোদ্ধারা? ভিন্ন রকম প্রশ্ন তারেকের!

রাজনীতি

ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়টি ব্যবহার হয়ে আসছে জনসাধারণের মল-মূত্র ত্যাগের স্থান হিসেবে। কিন্তু, সেই স্থানটি নাকি সম্প্রতি পরিস্কার করে নিচ্ছে জুলাই যোদ্ধারা। এমন বিস্ফোরক মন্তব্যই করেছেন আমজনতা দলের যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান।

সম্প্রতি আমজনতা দলের এই নেতার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল ‘তারেক’স টাইম’ এ একটি ভিডিওতে তাকে এমন মন্তব্য করতে দেখা যায়। এসময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের (..) মলমূত্র জুলাই যোদ্ধারা পরিষ্কার করবে। এই বিষয়টাকে কেমন করে দেখছেন? আমরা এর আগে খবর দেখলাম যে আওয়ামী লীগের কার্যালয় পাবলিক টয়লেটে রূপান্তরিত হয়েছে। সেখানে মানুষ গিয়ে (…..) করছে, (…..) করছে। অনেকে গিয়ে আপনার হল (…..) টানছে। এইরকম দেখলাম। কিন্তু এখন আবার দেখছি যে এইটা পরিষ্কার করছে। কারা পরিষ্কার করছে? জুলাই যোদ্ধারা। তার মানে কি হলো? আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পাবলিক যে (…….) এইটা আওয়ামী লীগকে পরিষ্কার করতে হতো না। আওয়ামী লীগকে পরিষ্কার করতে হলো না। এটা পরিষ্কার করে দিল কে? জুলাই যোদ্ধারা।’

এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ যখন সময় সুযোগ আসবে জুলাই যোদ্ধারা এটা পাহারা দেবে। সময় সুযোগ আসলে আওয়ামী লীগের হাতে আবার গুছায়ে দিবে। এই দেখার বাকি ছিল বলেন? আরে ভাই দরকার ছিল এনসিপির এই আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল করা? রাজনীতি করবে দুই চার পয়সা খরচ করতে হবে না শুধু ধান্দাবাজি ফাও এর কাছ থেকে নেওয়া ওর কাছ থেকে নেওয়া রাজনীতি এইভাবে হয়? এনসিপি আজ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের (…..) পরিষ্কার করতেছে আওয়ামী লীগ নিজে পরিষ্কার করা লাগলো না। তাহলে শেষ পর্যন্ত পাহাড় দিয়ে রাখবে। এখন আওয়ামী লীগ আসলে সুরসুর করে চলে যাবে।’

আমজনতার দলের শীর্ষস্থানীয় এই নেতা জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যারা এসব পরিস্কার করে এই যে কার্যালয়টা দখল করলো সবসময় তো এনসিপির বড় নেতারা এখানে বসবে না। তাই না? ছোট ছোট নেতারাও বসবে। কিছু মানুষকে তারা জায়গা দিবে। এই জায়গাটা একটা আতঙ্কিত জায়গা না? যেই মানুষগুলোকে নিয়ে এটা পাহারা দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের লোকেরা আসে যদি, ককটেল মারে তাহলে এনসিপির বড় নেতারা ওরা দায় নেবে নাকি?’

পরিশেষে আমজনতার দলের তারেক রহমান উল্লেখ করেন এনসিপি যদি এটি পরিস্কার না করতো তাহলে পরে আওয়ামী লীগকে দিয়েই এটি পরিস্কার করে নেওয়া হতো। তিনি বলেন, ‘যখন ঝড় আসে ঝড়ের মধ্যে দখল করাই যায় কিন্তু সর্বাক্ষণিক অনিরাপদ একটা জায়গা, অন্যের জায়গা দখল করার কোন দরকার আছে? ভাই রাজনীতিতে এইভাবেই বাটপারি চলবে বলেন? তাই বলে জুলাই যোদ্ধারা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের (….) পরিষ্কার করবে। আরে ভাই আওয়ামী লীগকে দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে নিতাম। তার তো সুযোগ দিলেন না।’

শুধু আমজনতার তারেক রহমানই নয় বরং অনেক নেট নাগরিকও প্রশ্ন তুলেছেন জুলাই যোদ্ধাদের আওয়ামী লীগ কার্যলয়ের মল-মূত্র পরিস্কারের সেই বিষয়টি নিয়ে। শেখ সুমন নামের একজন বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুকে মন্তব্য করছেন, ‘ফ্যাসিস্ট নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ জায়গা এটা পরিস্কার করা জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চরম অপমানের। তারা আমাদের জাতীয় বীর জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের কাছে এমন কিছু আশা করা যায় না।’

নাজনীন নিশা নামের আরেকজন ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘দেখলাম আমাদের প্রিয় জুলাই যোদ্ধারা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অফিসের মল-মূত্র পরিস্কার করছে। এসবের কি কোন দরকার ছিলো ভাইয়েরা? জায়াগাটা এমনিতেই অপরাধপ্রবণ! ওটা পরিস্কার না করে উল্টো আরও নোংরা করে রাখা উচিৎ বলে মনে করি। দয়া করে নিজেদের ছোট করবেন না।’

ফারহান খান নামের আরেকজন ফেইসবুকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে তাড়ানো যোদ্ধা আপনারা, আমরা আপনাদের সম্মান করি কিন্তু, এভাবে অন্যের জায়গা দখল ঠিক নয় তাও যখন আবার নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হেড অফিস। কারণ সেটা বর্তমানে মল-মূত্র ত্যাগের জায়গা। সরকার যদি নিজে থেকে জায়াগা টা নিজেদের দখলে সিজ করে নেয় বা কাউকে দিয়ে দেয় সেইটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু আপনাদের কাছে জাতি দখলের রাজনীতি চায় না। প্লিজ থামুন।’

খুশবু ইসলাম নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ বিগত ১৫-১৬ বছর দখলের রাজনীতি করেছে। দয়া করে আপনারা সেই দলে নাম লেখেবেন না। আপনারা জাতির কাছে বিশেষ কিছু সুতরাং জাতির সাথে বেঈমানী করবেন না।’ এভাবেই জুলাই যোদ্ধাদের নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কার্যালয় পরিস্কারের খবরে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন নেটিজেনরাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *