আমার প্রিয় নায়কের বুকে আমি নিজেই ছুরি চালাই

সারাদেশ

ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ—যাকে আজও আলাদা করে চেনা যায় তাঁর অভিনয়, স্টাইল আর ব্যক্তিত্বে। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে হয়েছিলেন কোটি ভক্তের হৃদয়ের নায়ক। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সবার বিস্ময় লাগিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান ঢালিউডের এ ক্ষণজন্মা তারকা।

মৃত্যুর প্রায় ২৯ বছর পরও দর্শকের হৃদয়ে সমানভাবে বেঁচে আছেন সালমান শাহ। আর তাঁকে হারানোর সেই দিনের স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেননি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সেই সময়কার তরুণ ডোম রমেশ—যিনি পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে নাম রাখেন সেকেন্দার।

সম্প্রতি আদালতের আদেশে সালমান শাহের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হত্যা মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হকের আদালত এ আদেশ দেন এবং তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন রমনা থানাকে।

রমেশ প্রকাশ সেকেন্দার স্মৃতিচারণ করে এক গণমাধ্যমকে বলেন—

“শুনেছি সালমান শাহের মৃত্যুর বিষয়ে আবারও লেখালেখি হচ্ছে। এবার নাকি পরিবার হত্যা মামলার অনুমতি পেয়েছে। লাখো মানুষের মতো আমিও ছিলাম তাঁর ভক্ত। হঠাৎ শুনলাম, সালমান শাহ মারা গেছেন এবং তাঁর লাশ আনা হচ্ছে মর্গে। চারিদিকে শুধু কান্না, কেউ বিশ্বাস করছিল না তিনি আর নেই।”

তিনি জানান, সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় (শুক্রবার) মর্গের সামনে ছিল হাজারো মানুষের ভিড়—তখনকার চলচ্চিত্র অঙ্গনের সব পরিচিত মুখসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। কেউই মেনে নিতে পারছিল না সেই তুখোড় তারকার মৃত্যু।

ময়নাতদন্তের করুণ স্মৃতি ভুলতে পারেননি রমেশ সেকেন্দার। তিনি বলেন—

“চিকিৎসকের নির্দেশে আমার প্রিয় নায়কের লাশে আমাকে নিজেই ছুরি চালাতে হয়েছিল। হাজার হাজার লাশ কাটলেও সালমান শাহকে ছোঁয়ার স্মৃতি আজও ভুলতে পারিনি।”

ডোমদের কাজ সম্পর্কে তিনি জানান—

মরদেহ প্রস্তুত করা, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সহায়তা, প্রয়োজনীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ এবং শেষে সেলাই করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর—এসবই তাদের দৈনন্দিন দায়িত্ব।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার হয় সালমান শাহের মরদেহ। সে সময় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরের বছর মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করেন তিনি। আদালতের নির্দেশে তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে।

এত বছর পর আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে সালমান শাহের মৃত্যু—ভক্তদের মনে একটিই প্রশ্ন, আসলে কী হয়েছিল সেই দিন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *