আবিদ ছোটভাই মানুষ, ও বুঝতে পারেনি

সারাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পক্ষে ডাকসু ইস্যুতে কীভাবে আদালতে লড়েন আইনজীবী শিশির মনির’ সোমবার এমন প্রশ্ন তুলেছিলেন ছাত্রদল মনোনীত ডাকসু ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির।

সোমবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অংশ নিয়ে ভিপি প্রার্থী আবিদের প্রশ্নের জবাব দেন শিশির মনির। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের হয়েছে।

তিন বাম সংগঠন সমর্থিত ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম এ রিট দায়ের করেন।

তার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য। তবে শিশির মনির জামায়াতপন্থি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কীভাবে লড়েন, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।

আবিদুল ইসলামের এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। তিনি বলেছেন, সে ছোটভাই মানুষ। হয়তো ভুল করে বলে ফেলেছে। আমি মাইন্ড করিনি।

এদিন রাতেই এক বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে যুক্ত হয়ে উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব মন্তব্য করে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

টকশোতে দেখা যায়, উপস্থাপক অ্যাডভোকেট শিশির মনিরকে প্রশ্ন করে বলছেন, ‘আবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রশ্ন করেছেন যে, আপনি জামায়াতের আইনজীবী হয়ে ডাকসুর মামলায় কীভাবে যুক্ত হলেন? এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?’

এসময় অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি অনলাইনে। সে ছোটভাই মানুষ। হয়তো ভুল করে বলে ফেলেছে। আমি মাইন্ড করিনি। ছোট মানুষ, ও বুঝতে পারেনি। এজন্য বলে ফেলেছে, তাই ব্যক্তিগতভাবে আমি তার প্রতি একদমই কিছু মনে করিনি। ছোট মানুষের ছোট কথা হয়েছে, এই আরকি।’

এরপর উপস্থাপক জানতে চান তিনি শুধু ডাকসুর এই মামলায় লড়ছেন নাকি আরও আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত? এ প্রশ্নের জবাবে শিশির মনির বলেন, ‘আমি অনেক আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে আমি অনেক মামলায় লড়েছি। অলমোস্ট সকল মামলায়ই আমরা বিজয়ী হয়েছি। এটা হয়তো আমার ছোটভাই আবিদ জানেন না। না জানার কারণেই হয়তো তার মুখ দিয়ে কথাটা বের হয়ে গেছে। আমি মনে করি, সে ইচ্ছাকৃতভাবে এটা বলেনি। কথার কথা বা মুখ ফসকে এটা বলে ফেলেছে, এর চেয়ে আর বেশিকিছু মনে করিনি।’

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এদিন বেলা ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে ডাকসুর নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন। বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দিয়েছিলেন।

ওই আদেশের ফলে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচন আটকে গিয়েছিল। হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে আদেশ দেন। এরপরই শিশির মনিরকে নিয়ে প্রশংসা সূচক ক্যাপশন লেখে স্ট্যাটাস দেওয়া শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।

ফাইয়াজ ইফতি নামের একজন লেখেন, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেক বিএনপি নেতার মামলায় আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। আর এই দুর্দিনে আবিদ শিশির মনিরকে নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, এগুলো হাস্যকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *