বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ কোম্পানি ‘মায়েরস্ক’ ঘোষণা করেছে যে, তারা আর ইসরাইলের হাইফা বন্দর ব্যবহার করবে না। ইসরাইলের সবচেয়ে বড় সমুদ্র বন্দর হচ্ছে হাইফা। এছাড়া ইসরাইলের আরো দুটি সমুদ্র বন্দর আছে আশদোদ ও আইলাত। হাইফা বন্দরে ইনডিয়ার আদানি গ্রুপের বড় বিনিয়োগ আছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার কন্টেইনার শিপিং কোম্পানি মায়েরস্ক জানিয়েছে, ইরানের সাথে ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যে তারা দেশটির হাইফা বন্দরে জাহাজ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
ডেনিশ কোম্পানিটি জানিয়েছে, এই অঞ্চলে তাদের নির্ধারিত কার্যক্রমে আর কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।
২০২২ সালে বেসরকারিকরণ করা হাইফা বন্দরের ৭০ শতাংশ মালিকানা ভারতের আদানি পোর্টসের এবং বাকি ৩০ শতাংশ ইসরাইলের গ্যাডোট গ্রুপের হাতে।
আদানি পোর্টস হলো ভারতের বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানির নেতৃত্বে আদানি গ্রুপের বন্দর পরিচালনা শাখা। হাইফা বন্দরসহ কোম্পানিটি ভারতীয় জলসীমার বাইরে চারটি বন্দর পরিচালনা করে। চলমান ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে নানাভাবে সমালোচিত আদানি গ্রুপ।
রয়টার্স বলছে, আদানি গ্রুপের একজন মুখপাত্র মন্তব্যের জন্য ইমেইল এবং টেক্সট বার্তা পাঠানো হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।
ইসরাইল গত শুক্রবার থেকে ইরানে হামলা চালিয়ে আসছে। তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই হামলা বলে যুক্তি দেখিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে দখলদার খ্যাতি পাওয়া ইসরাইল। নেতানিয়াহু সরকারের এমন হঠকারিতার জবাবে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইরান। একই সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা সংক্রান্ত ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান।
বৃহস্পতিবার ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী জানিয়েছে, তারা হাইফা এবং তেল আবিবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা শিল্পের সাথে যুক্ত সামরিক ও শিল্প স্থাপনাগুলোতে সম্মিলিত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান সম্ভবত পরিকল্পিতভাবে হাইফায় আঘাত হানছে। এর ফল পাওয়া গেলো। মায়েরস্ক জাহাজ চলাচল বন্ধ করার কারণে অন্য কোনো কোম্পানি এই বন্দর ব্যবহার করতে চাইবে না।
হাইফা অচল হলে আশদোদ ও আইলাত খুব সহজে অকর্যকর করা সম্ভব হবে। ইরানের একটি কৌশল হতে পারে সমুদ্রপথে ইসরাইলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা। এরপর যদি হরমুজ ও বাব আল মান্দেব প্রণালী বন্ধ করা হয়। তাহলে ইসরাইলের খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি সরবরাহ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হাইফা বন্দর অচল করে দেয়া ইরানের এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় কৌশলগত অর্জন হবে বলেও মনে করছেন তারা।