১০ মে। হঠাৎ করেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে। কী এমন ঘটেছিল সেই দিন, যার কারণে দলটির সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলো? বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “দেশে এখন আর কোনো গণতন্ত্র নেই। বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন পর্যন্ত সবাই অস্ত্রধারী চক্রের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এখনকার সরকার চলছে গায়ের জোরে, সংবিধান আর নিয়ম-নীতির কোনো বালাই নেই।”
শেখ হাসিনা দাবি করেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হয়েছে। কিন্তু এরপর থেকেই চক্রান্ত শুরু হয়। ৭ জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সমঝোতার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। ১৫ জুলাই থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে থানায় আগুন, পুলিশ হত্যা, সরকারি ভবনে হামলা হয়—যা তিনি ‘পূর্বপরিকল্পিত জঙ্গি তাণ্ডব’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “৪৬০টি থানা, মেট্রোরেল, বিটিভি ভবন, হাসপাতাল, এমনকি আওয়ামী লীগের অফিস পর্যন্ত জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাজারো নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন, তবু আজ দোষ দেওয়া হচ্ছে আমাদের ঘাড়ে!”
এছাড়াও শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস ক্ষমতা দখল করেছেন অস্ত্রধারীদের দিয়ে, আর দেশের সীমান্ত এখন অরক্ষিত। “মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা যদি বাংলাদেশে হামলা করে, তার দায় কে নেবে?” প্রশ্ন করেন তিনি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করেছে। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি, খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি। অথচ আমাদের ওপরই আজ নিষেধাজ্ঞা! যারা দেশ ধ্বংস করেছে, তাদের কোনো বিচার নেই, অথচ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।”
শেখ হাসিনার দাবি, “ড. ইউনূস দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, শ্রমিকদের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। অথচ তিনিই এখন দেশের শীর্ষ ক্ষমতায়। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ট্যাক্স ফাঁকি, মানি লন্ডারিংসহ একাধিক মামলার রায় আটকে দেওয়া হয়েছে ষড়যন্ত্র করে।”
শেষে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আজ একটি রণক্ষেত্র। যারা দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে, যারা নিরীহ মানুষকে নিপীড়ন করছে, তাদের বিচার একদিন হবেই। আর আওয়ামী লীগ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।”