সেভেন সিস্টার্সে কান্নার রোল, বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

আন্তর্জাতিক

ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ অঞ্চল ও পশ্চিমবঙ্গে নেমে এসেছে অর্থনৈতিক ধসের ছায়া। বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলবাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর উল্টো চাপে পড়েছে মোদি প্রশাসন। দেশের ভেতরেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ ব্যবসায়ী ও খেটে খাওয়া মানুষ। সম্প্রতি ভারতীয় প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম *দ্য ওয়্যার* এক ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনে তুলে ধরে এই চিত্র।

কয়েকদিন আগেই ভারত সরকার হঠাৎ করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্যের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর ফলে পেট্রোপোল, হিলি, মাহাদীপুর, ফুলবাড়ি ও চ্যাংড়াবান্ধা—এই গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

দ্য ওয়ার বলছে, এসব বন্দর দিয়ে আগে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ ট্রাক পণ্য যেত—এখন সপ্তাহে ২০০ ট্রাকও যাচ্ছে না। এতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বহু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, আর শ্রমজীবীদের জীবিকায় নেমে এসেছে ভয়াবহ বিপর্যয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দেশের এই বাণিজ্য টানাপোড়েনে অন্তত ১২-১৫ হাজার শ্রমিক—যাদের মধ্যে ট্রাকচালক, খালাসকারী, দিনমজুর রয়েছেন—তাঁদের প্রধান আয় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কেউ কেউ বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন, কেউ হয়তো দিনই পাচ্ছেন না।

স্থলপথে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাংলাদেশ এখন ঘুরপথে—নৌ ও অন্যান্য রুটে—ভারতে পোশাক রপ্তানি করছে। এতে সময় ও খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণ। আগে যেটা দুই দিনে যেত, এখন লাগছে ৮–১০ দিন। ফলে ভারতের বাজারে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যের দাম বেড়ে গেছে অনেকটাই। দ্য ওয়ার, হিন্দুস্তান টাইমসসহ একাধিক মিডিয়ায় উঠে এসেছে এই তথ্য।

বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজার বাজারে এই নিষেধাজ্ঞার বড় প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, উৎসবের সময় রাজ্যের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের দারুণ চাহিদা থাকে। দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় নিম্নবিত্ত শ্রেণির অনেকেই এই পোশাক কেনেন। এবার সেই সরবরাহ ব্যাহত হলে, ভোগান্তিতে পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে।

গত ১০ মাসে ভারত-বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ১০–১২ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যার বড় অংশই তৈরি পোশাক। এখন এই রপ্তানি সংকুচিত হওয়ায় ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারেই বিপর্যয় ঘনিয়ে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *