ভারতে ক্রিকেট ম্যাচে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ায় গণপিটুনিতে মৃত্যু

খেলা

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে অতর্কিত জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের বিদ্যমান বাজে সম্পর্ক আরও জটিল আকার ধারণ করছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতে বসে পাকিস্তানের নামে স্লোগান দেওয়ার এক ব্যক্তিতে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সে প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের কর্ণাটক শহরের উপকণ্ঠে একটি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে এক ব্যক্তি ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে ওঠেন। এতে আশেপাশে থাকা বাকিরা ক্ষিপ্ত হয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেন ওই ব্যক্তিকে। এ ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনাকে ‘মব লিঞ্চিং’ (গণপিটুনি) আখ্যা দিয়ে কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা বলেছেন, এখনো রিপোর্ট পাননি তিনি। তবে মামলাটিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে ওই ব্যক্তি পাকিস্তানের নামে স্লোগান দিয়েছিলেন, তেমনটা জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন পরমেশ্বরা।

পুলিশ সূত্রে এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত রোববার ম্যাঙ্গালুরুর উপকণ্ঠে কাডুপু গ্রামের ভাট্রা কাল্লুরর্তি মন্দিরের পাশে বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। গণপিটুনির সময় তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানোয় শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরবর্তীতে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ম্যাঙ্গালুরু সিটির পুলিশ কমিশনার অনুপম আগারওয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘মন্দিরের মাঠের কাছে মৃতদেহটি পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এটিকে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করে। ২৮ এপ্রিল (সোমবার) করা পোস্টমর্টেমে দেখা গেছে, ওই ব্যক্তির শরীরে একাধিক ভোঁতা আঘাতের চিহ্ন আছে। চিকিৎসার অভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’

এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩ এর ১০৩ (২) ধারা মোতাবেক একটি মামলা করেছেন। ৫ বা তাঁর চেয়ে বেশি ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে মামলা করেছেন ওই ব্যক্তি। পুলিশ কমিশনার অনুপম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১০ জনকে খুঁজছে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে অনুপমের ভাষ্য, ‘মূল অভিযুক্ত হিসেবে শচীন নামের একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কুডুপুরের বাসিন্দাকে ইতোমধ্যে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, বাকি সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এজন্য সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল ডাটা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *