নিউজ ডেষ্ক- পাবনার সুজাতনগর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের কৃষক মোঃ আফজাল হোসেন ও তার ভাই এবছর ৮২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চষে করেছেন। এবছর বাম্পার ফলন হওয়ায় ঘরে তুলেছেন প্রায় ৫ হাজার মণ পেঁয়াজ। এতো পেঁয়াজ উৎপাদন করেও নেই আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা। প্রতি বছর আধুনিক সংরক্ষন ব্যবস্থার অভাবে প্রায় ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়।
এপর্যন্ত ৫০০-৬০০ মণ পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। প্রায় ৫০০-৬০০ পেঁয়াজ সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। ২ ভাইয়ের ঘরে প্রায় ৩ হাজার মণ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেছেন। এতে প্রায় প্রতি মাসেই ১০ কেজির বেশি পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগামী কার্তিক মাস পর্যন্ত পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু এভাবে নষ্ট হতে থাকলে উৎপাদন খরচও তুলতে কষ্ট হবে বলে জানান তারা।
আফজাল হোসেন জানান, ১ মণ পেঁয়াজের উৎপাদন, সংরক্ষণ, বাছাইকরণ, বস্তাজাত করা ও পরিবহন খরচ প্রায় ১৫০০-১৬০০ টাকার মতো পড়ে । কিন্তু বর্তমান বাজারে পেঁয়াজ ১৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দামের এই অবস্থা এবং পেঁয়াজ পচে যাওয়ায় বড় ক্ষতির আশংঙ্কা করছেন।
একই গ্রামের কৃষক মোঃ আকবর আলী বলেন, এবছর ১ হাজার মণ পেঁয়াজ ঘরে তুলেছেন। পেঁয়াজের বাজার দর ভালো না তাই সব পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে আরো বিপদে পড়েছেন। প্রায় ৩০০ মণ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রচন্ড গরমের কারণে পেঁয়াজ আরো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
আকবর আলী আরো বলেন, আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেই তাই বাঁশের তৈরী মাচাতেই আমাদের ভরসা। এতেও খুব বেশি লাভ হচ্ছে না। পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছেই।
দূর্গাপুর গ্রামের প্রায় প্রতিটি চাষির ঘরেই রয়েছে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য বাঁশের তৈরী মাচার ঘর। আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় বাঁশের মাচাতেই তাদের ভরসা। মাচার তৈরী ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষন করা এটি প্রাচিন পদ্ধতি বলে জানান চাষিরা।
১০ ফুট উঁচু ঘরের ৭ ফুট উপরে পেঁয়াজ রাখা হয়। ঘরটি ২৫-৪০ হাত লম্বা হয়ে থাকে। পর্যাপ্ত বাতাস প্রবেশের রাস্তা রেখে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হয়।
সুজাতনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিউল ইসলাম বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ পেঁয়াজ উৎপাদনের অঞ্চল হলো সুজাতনগর। এ অঞ্চলে প্রায় ৭ হাজারেরও বেশি প্রাচীন বাঁশের তৈরী মাচার পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামারবাড়ী পরিচালক মোঃ জাহিদুল আমিন বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর আরো বেশি পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে। তবে প্রতি বছরের মতো এবছরও প্রায় ৮-৯ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘাটতি পূরনের জন্যই পেঁয়া আমদানির প্রয়োজন পড়ছে।