নিউজ ডেষ্ক- ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর থেকে হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোকে ছাটাইয়ের বিষয়ে নানান গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এমনও শোনা গেছে, ২০২২ সালের আগেই ডোমিঙ্গোকে সরিয়ে নতুন কোচ নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
তেমন কিছু হয়নি। এখনও বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হিসেবেই আছেন ডোমিঙ্গো। তার অধীনেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছে টাইগাররা। তবে আরও অনেকের মতো তাকে নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট নন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও।
বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপে মাশরাফি সোজাসাপটাই বলেছেন, ডোমিঙ্গোর অধীনে বাংলাদেশের সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি। ডোমিঙ্গোকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেননি মাশরাফি। এ সিদ্ধান্ত বরং বোর্ডের ওপরেই ছেড়েছেন তিনি।
তবে ডোমিঙ্গোর ব্যাপারে খেলোয়াড়দের অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাশরাফি। তার মতে, কোনো কোচের অধীনে ড্রেসিংরুম সন্তুষ্ট থাকাই সবচেয়ে বড় বিষয়। কিন্তু ডোমিঙ্গোর অধীনে তা নেই।
মাশরাফি বলেছেন, ‘এটা (কোচ পরিবর্তন) তো বিসিবির সিদ্ধান্ত। আমার কাছে জিজ্ঞেস করেছেন আমি বলছি আমার কাছে মনে হয়ে এখন পর্যন্ত ডোমিঙ্গোর সাফল্যের হার ঐদিকে নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্লেয়ারদের অনেক অভিযোগ আছে তাকে নিয়ে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রথম যে জিনিসটা তা হলো ড্রেসিংরুম খুশি থাকা। ড্রেসিংরুম যদি খুশি থেকে থাকে তাহলে ভালো। আমার কাছে মনে হয়নি সেটা, তাই খোলামেলা বলেছি। সাফল্যের কথা যদি বলি, ডোমিঙ্গোর রেশিও বাংলাদেশ ক্রিকেটে অতো ভালোর দিকে নেই। এখন বিসিবি যদি তাকে নিয়ে খুশি থাকে, খুব ভালো। এটি বিসিবির হাতেই।’
খেলোয়াড় হিসেবে শুধুমাত্র একটি সিরিজেই ডোমিঙ্গোকে পেয়েছেন মাশরাফি। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই সিরিজেই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন তিনি। সেটিই এখন পর্যন্ত মাশরাফির শেষ সিরিজও হয়ে আছে। তবু বাইরে থেকে যতটুকু দেখেছেন, তার ভিত্তিতেই ডোমিঙ্গোর কোচিংয়ের মূল্যায়ন করেছেন মাশরাফি।
তার ভাষ্য, ‘দল যখন সফল হবে অবশ্যই এটা তার ক্রেডিট। আমি ওর সঙ্গে খুব বেশি কাজ করিনি, মাত্র তিনটা ম্যাচ। খুব বেশি আলোচনা, কথা বলার সুযোগ হয়নি ওর সাথে। তবে যত ম্যাচ আমরা হেরেছি, যেই দায়িত্বও কিন্তু তাকে নিতে হবে। আমরা অনেক ম্যাচ এখানে হেরেছি, যেগুলো হারার কথা ছিল না। আবার নিউজিল্যান্ডে যেটা জিতেছি, সেটা হয়তোবা জেতার কথা ছিল না… এরকমও আছে।’
‘সবমিলিয়ে দেখা যাক সামনে কত দূর থাকে। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি মনে করে ব্যর্থতার পাল্লাটা ওর ঘাড়ে বেশি। আমি আগেও বলেছিলাম, বাংলাদেশ দল এখন ঐ অবস্থায় নেই যে এক্সপেরিমেন্ট করবে। এখন দর্শকরা ফল চায়, সবাই ফল চায়। সেই ক্ষেত্রে কোনো নতুন কোচ এসে এক্সপেরিমেন্ট করার জায়গায় বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন নেই।’
‘বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন পারফরম্যান্স দেওয়ার সময়। ওয়ানডে ক্রিকেটে কিন্তু লাস্ট ৬-৭ বছর ধরে ভালো খেলে আসছে। অন্যান্য ফরম্যাটে কিন্তু এই একই অবস্থা। আপনারা যদি দেখেন টেস্টে আমরা হোমে যেসব ম্যাচ হেরেছি, লাস্ট (টি২০) বিশ্বকাপ, আফগানিস্তানের সাথে টেস্ট ম্যাচ, অনেক কিছুই আছে।’
অতীতে যাই হোক, আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অবশ্য ডোমিঙ্গোর কাছে ইতিবাচক প্রত্যাশাই করছেন মাশরাফি। যেহেতু ডোমিঙ্গোর নিজের দেশে খেলা, তাই এই সিরিজে তার বড় ভূমিকা থাকবে বলে বিশ্বাস মাশরাফির।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এখনও পর্যন্ত কিন্তু ওর রেশিও খারাপের দিকেই বেশি।! দেখা যাক, এখন যদি দক্ষিণ আফ্রিকায় এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করে আসে। কারণ ওর কালচার, ওর চেনা পরিবেশ, উইকেট সম্পর্কেও জানে। এখানে আশা করছি ও একটা বড় ভূমিকা পালন করবে। এখন যদি সেটা করতে পারে খুব ভালো হবে।’