আকরিক লোহার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম টানা চতুর্থ দিনের মতো নিম্নমুখী রয়েছে। চীনে দুর্বল চাহিদা এবং অস্ট্রেলিয়া ও ব্রাজিল থেকে বেড়ে যাওয়া রপ্তানির চাপের মুখে এই পতন দেখা গেছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার
চীনের ডালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জে সেপ্টেম্বর মাসের সর্বাধিক লেনদেন হওয়া আকরিক লোহার চুক্তির দাম বুধবার (২৮ মে) ০.২১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯৮ ইউয়ান (প্রায় ৯৬.৯৪ মার্কিন ডলার) প্রতি মেট্রিক টন। একই সময়ে সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জে জুন মাসের বেঞ্চমার্ক চুক্তির দাম ০.১৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৫.৯ ডলার প্রতি টনে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ ২০২৫ সালে ৩.৭ কোটি টন কমে ৯৬৮ মিলিয়ন মেট্রিক টনে নামতে পারে। এ তথ্য দিয়েছেন এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসের মেটাল ও মাইনিং গবেষণা বিভাগের পরিচালক মার্ক ফার্গুসন। বুধবার সিঙ্গাপুরে এক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘চাহিদার গতি মন্থর থাকায় আকরিক লোহার বাজারে চাপ তৈরি হয়েছে।’
চীনের ইস্পাত শিল্পের সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, মে মাসে দেশের প্রধান ইস্পাত প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর দৈনিক উৎপাদন আগের মাসের তুলনায় ০.৩ শতাংশ কমে ২.২ মিলিয়ন টনে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান মাইস্টিলের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রাজিল থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহে মোট ২৭.৩ মিলিয়ন টন আকরিক লোহা রপ্তানি হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ০.৯ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে শুধু অস্ট্রেলিয়া থেকেই চীনে রপ্তানি হয়েছে ১৭.৪ মিলিয়ন টন, যা ১০.৪ শতাংশের প্রবৃদ্ধি।
অন্যদিকে, ব্রাজিল সরকার ১৯টি ইস্পাত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আবার চালু করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
তবে চীনের সাম্প্রতিক শিল্প মুনাফার প্রবৃদ্ধি কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে বাজারকে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে শিল্প খাতে মুনাফা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সরকারের নেয়া প্রণোদনা প্যাকেজ কার্যকর হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ডালিয়ান এক্সচেঞ্জে অন্যান্য ইস্পাত উৎপাদন উপকরণ যেমন কোকিং কয়লা ও কোকের দাম যথাক্রমে ০.৭৫ ও ০.৯৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
এছাড়া, শাংহাই ফিউচার এক্সচেঞ্জেও বেশিরভাগ ইস্পাত পণ্যের দাম কমেছে। রিবার ১ শতাংশ, হট-রোলড কয়েল ০.৭৪ শতাংশ, স্টেইনলেস স্টিল ০.৮২ শতাংশ কমলেও, ওয়্যার রডের দাম বেড়েছে ১.৯৬ শতাংশ।
সূত্র: চ্যানেল২৪