জড়িয়ে ধরে মাসে আয় করেন লাখ টাকা

ফিচার

নিউজ ডেষ্ক– জীবিকা নির্বাহ করতে নানা পেশায় যুক্ত হচ্ছেন মানুষ। কেউ করছেন চাকরি, কেউ বা করছেন ব্যবসা। তবে জানেন কি? এর বাইরেও মানুষ নানা পেশায় জড়িত। যেমন ধরুন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা। আপনার কাছে যেটা বিরক্তিকর সেই কাজটিই অনেকে করছেন পেশা হিসেবে। মাসে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা।

তেমনই আরও একটি মজার পেশা হচ্ছে জড়িয়ে ধরা। প্রিয়জন ছাড়া কাউকে জড়িয়ে ধরা বিব্রতকরও বটে। তবে পেশাদার আলিঙ্গনকারীরা এই কাজটি করছেন খুব স্বাচ্ছন্দ্যে। এটি একদিকে যেমন তাদের পেশা, অন্যদিকে সেবারও অংশ। এই কাজের জন্য প্রতি ঘণ্টায় তারা আয় করছেন ৬৫০০ টাকা।

মূলত এটি হচ্ছে স্পর্শ থেরাপি। কোনো মজার কাজ নয়। বরং বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং কষ্টসাধ্য কাজ। জাতি, ধর্ম-বর্ণ কিছুই কোনো ব্যাপার না এই পেশার মানুষদের কাছে। যে কোনো রোগীকেই তারা টাকার বিনিময়ে জড়িয়ে ধরছেন। পুরুষ ও নারী উভয় রোগীর জন্যই আলাদা আলিঙ্গনকারী রয়েছে এখানে।

তাদের বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট ২০ থেকে ৭৫ বছর বয়সী পুরুষ। তাদের বেশিরভাগই একাকী ও আঘাতজনিত সমস্যা, অক্ষমতা বা মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন। মানসিক চাপ, হতাশা, একাকীত্ব দূর করতেই তারা আলিঙ্গনকারীদের কাছে আসেন।

পরম স্নেহে তারা সেই মানুষগুলোকে জড়িয়ে ধরেন। যা হয়তো তার প্রিয়জনের কাছ থেকে পাওয়ার কথা ছিল। এই টাচ থেরাপি বা কাডল থেরাপি স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত সমস্যার চিকিৎসায় করা হয়।

বিষণ্নতা দূর করতে, সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি, ব্যথা কমাতে, উদ্বেগ কমাতে, আগ্রাসন কমাতে, চাপ কমাতে, শিথিলতা বাড়াতে, আত্মসম্মান উন্নত করতে, PTSD কমাতে বেশ কার্যকরী।

টাচ থেরাপির উপর রয়েছে নানা গবেষণা ও গবেষণাপত্র। একজন আলিঙ্গনকারী আলিঙ্গন করার পাশাপাশি হাত ধরা, মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া, সুড়সুড়ি দিয়ে আনন্দ দিতে পারেন তার ক্লায়েন্টকে।

এছাড়াও একজন আলিঙ্গনকারী তার ক্লায়েন্টর সঙ্গে সিনেমা দেখতে, গান শুনতে কিংবা গল্প করতে পারবেন। তবে কোনো যৌন সম্পর্কে জড়ানোর অনুমতি নেই তাদের। মূলত প্রিয়জন থেকে দূরে থাকেন যারা তাদের প্রশান্তির জন্যই এই কাজগুলো করেন তারা।

একজন পেশাদার আলিঙ্গনকারীকে অবশ্যই সহানুভূতিশীল, যত্নশীল, বোঝাপড়া এবং ইতিবাচক হতে হবে। ভারতে বেশ জনপ্রিয় এই পেশা। ভারতের বিভিন্ন সংস্থা এই পরিষেবা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা পুরোপুরি নিরাপত্তাও বজায় রাখছে। কারণ এই কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

তারা আলিঙ্গনকারীদের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি করেন। এমনকি বীমাও করে রাখেন। নারী-পুরুষ উভয়ই কর্মী আছে তাদের সংস্থায়। এই পরিষেবা দিতে গিয়ে তারা দেখছেন ভারতে এমন হাজার হাজার মানুষ রয়েছেন যারা একাকীত্বে ভুগছেন। প্রিয়জনদের কাছ থেকে দূরে থাকায় হতাশা, মানসিকচাপসহ নানা রোগে ভুগছেন।

শুধু ভারতেই নয় বিশ্বের অনেক দেশেই রয়েছে এই পেশার মানুষ। মাসে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। গবেষকরা বলছেন, একজন মানুষ যখন প্রেম ও স্নেহের অভাব অনুভব করেন। তখন তার আলিঙ্গনের প্রয়োজন হয়। এতে শরীরে হরমোন অক্সিটোসিন নিঃসরণ করে। যা একাকীত্ব ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *