চীনের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা

আন্তর্জাতিক

দীর্ঘ দিন ধরেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘গুরুতর হুমকি’ বলে বিবেচনা করে আসছিল ইসরায়েল। আর বহুদিনের প্রস্তুতি শেষে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযানে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, সামরিক ঘাঁটি ও শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর।

তেল আবিব জানিয়েছে, এটি ছিল ‘একটি সুনির্দিষ্ট ও প্রতিরোধমূলক হামলা’ যেটির লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক হুমকি প্রতিহত করা।

এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইসরায়েল সরকার সতর্ক করেছিল, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছেছে। ইসরায়েলের হামলার জবাবে তেলআবিবসহ বিভিন্ন শহরে ইরান একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মাধ্যমে অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ শুরু করে দেশটি।

ইসরায়েলের এ হামলায় নাতানজ, ইসফাহান ও ফরদোর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনা এবং একাধিক শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে নিশানা করা হয়। স্যাটেলাইট চিত্র ও বিশ্লেষকদের মতে, অন্তত দুটি স্থাপনায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। তবে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর অনেক অংশ গভীর ভূগর্ভে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ পরিমাণ এখনো পরিষ্কার নয়। ইসরায়েল দাবি করেছে, হামলায় ‘গুরুতর ক্ষতি’ হয়েছে এসব স্থাপনা। যদিও ইরান এমন দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে।

ইরান ইসরায়েলের এই পাল্টা পাল্টি হামলার মধ্যেই এবার চীনের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার বাড়াচ্ছে চীন। পারমাণবিক শক্তিধর যেকোনো দেশের তুলনায় নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি করছে চীন। ২০২৫ সালের প্রথম দিকে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৬০০-তে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী অস্ত্র প্রতিযোগিতায় গতি যোগ করেছে এবং কৌশলগত উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

তবে বেইজিং বলেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি, শুধু আত্মরক্ষার জন্য। সম্প্রতি বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, চীন তার জাতীয় নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা অনুসারে পারমাণবিক ক্ষমতা সর্বনিম্ন স্তরে রেখেছে এবং কখনো অস্ত্র প্রতিযোগিতায় জড়িত হয় না। বেইজিং যেকোনো সময় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতেই পারমাণবিক অস্ত্রের প্রথম ব্যবহার না করার নীতি অনুসরণ করে এবং অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মুখপাত্র আরও বলেন, চীন একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র যারা এই ধরনের নীতি গ্রহণ করেছে এবং নিজেদের বৈধ নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা এবং বিশ্বকে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল রাখার জন্য দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *