ইসরাইলি ৭৮৯ সেনা পরপারে, যা জানা গেল

আন্তর্জাতিক

গাজায় চলমান যুদ্ধে নতুন এক ধ্বংসাত্মক অধ্যায় রচিত হলো মঙ্গলবার। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে হামাসের আল কাসাম ব্রিগেড একটি সুপরিকল্পিত অ্যাম্বুশে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত সাত সেনা, আহত ১৭, যাদের অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাশাপাশি আরও কয়েকজন সেনার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে খান ইউনিসের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। আল-মায়াদিনের খবরে বলা হয়, আল কাসাম যোদ্ধারা ইসরায়েলের দুটি সেনা ইউনিটকে একত্রিত করে পরিকল্পিত ফাঁদে ফেলেন। হামলায় ব্যবহৃত হয় গুলি, বিস্ফোরক ও শাওয়াজ এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস, যার মাধ্যমে একটি ‘পুমা’ টাইপের সাঁজোয়া যান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

ইসরায়েলি সেনাদের আতঙ্কিত চিৎকার ধরা পড়ে হামাস যোদ্ধাদের ধারণ করা ভিডিওতে। প্রথম হামলার পর যখন আহতদের উদ্ধারে আরেকটি দল এগিয়ে আসে, তখন দ্বিতীয় অ্যাম্বুশে তারাও হামলার শিকার হয়।

নিহতরা সবাই ইসরায়েলের ৬০৫তম কম্ব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের সদস্য। তাদের মধ্যে একজন প্লাটুন অফিসারও ছিলেন। ইসরায়েলের সেনা সদর দপ্তর জানায়, নিহতদের পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে এবং আহতদের মধ্যে অনেকেই এখন তেল হাসিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

একই দিনে বিয়ের আল-সাবি এলাকায় একটি ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আরও এক বিশেষ বাহিনীর সদস্য নিহত হন। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনা নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭৯ জনে।

হামাস নিশ্চিত করেছে, তারা ওই দিনে খান ইউনিসে দুটি পৃথক আক্রমণ চালায়। একটি হামলায় একটি বাড়ির ভেতরে আশ্রয় নেওয়া সেনাদের লক্ষ্য করে আল ইয়াসিন ১০৪ শেল ও আরপিজি নিক্ষেপ করা হয়। অন্য আক্রমণে একটি মেরকাভা ট্যাঙ্কের উপর পরিচালিত হয় বিস্ফোরক হামলা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অ্যাম্বুশ কৌশলগতভাবে অত্যন্ত সফল ও মারাত্মক ছিল। এটি ইসরায়েলের সামরিক কৌশল এবং গোয়েন্দা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। খান ইউনিসের এই হামলা হয়তো চলমান যুদ্ধের গতিপথে এক ঐতিহাসিক বাঁক হয়ে থাকবে।

গাজার আকাশে যখন গোলার ধোঁয়া আর ধ্বংসস্তূপ, তখন পৃথিবী মনে রাখবে এই প্রতিরোধ—যা এক অসম লড়াইয়ে ন্যায়বিচারের পক্ষের সাহসী বার্তা হয়ে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *