নিউজ ডেষ্ক- রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের মধ্যে কামানের গোলা দিয়ে চালানো হামলায় ইউক্রেনের ৭০ সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ওখতিরকা শহরে গত রোববার ভয়াবহ ওই হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ইউক্রেনের সামি অঞ্চলের প্রশাসনিক প্রধান দিমিত্র ঝিভিতস্কি জানিয়েছেন, গত রোববার রুশ বাহিনীর চালানো ওই হামলায় ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর একটি ইউনিট পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। হামলার পর থেকেই স্বেচ্ছাসেবক ও উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টেলিগ্রামে তিনি জানিয়েছেন, ‘হামলায় বহু মানুষ মারা গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন মৃত ইউক্রেনীয় সেনার জন্য কবরস্থানে স্থান প্রস্তুত করা হয়েছে।’
এছাড়া এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় রুশ বাহিনীকেও পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন দিমিত্র ঝিভিতস্কি। তার দাবি, ‘শত্রুদের যা পাওনা, সেটা তারা পেয়েছে। শহরে বহু সংখ্যক রুশ সেনার মরদেহ আছে। আমরা এখন সেগুলো রেডক্রসের হাতে তুলে দিচ্ছি।’
অবশ্য দিমিত্র ঝিভিতস্কির এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। এদিকে রাজধানী কিয়েভ এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনে ফের হামলা শুরুর কথা জানিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির দাবি, প্রতিবেশী দেশ বেলারুশের সীমান্তে মস্কো-কিয়েভ আলোচনা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই শহর দু’টিতে হামলা শুরু করে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেস অব ইউক্রেন জানিয়েছে, ‘কিয়েভের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। আক্রমণের ক্ষমতা কমে যাওয়া সত্ত্বেও শত্রুরা সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।’
তারা আরও দাবি করে, হামলা চালানোর সময় বেলারুশের উচ্চ প্রশিক্ষিত সামরিক ইউনিটগুলোকে সাথে রাখার এবং রুশ সামরিক বিমান চলাচলের জন্য বেলারুশিয়ান আকাশসীমা ব্যবহার করারও পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।
এছাড়া কিয়েভের সঙ্গে রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনেও হামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির সরকার। ইউক্রেনের স্টেট সার্ভিস ফর স্পেশাল কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রোটেকশন জানিয়েছে, ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রুশ সেনারা বিমানবন্দর থেকে নিকোলায়েভ মহাসড়কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং সেখানকার একটি হিমাগারের কাছে জড়ো হচ্ছে।’
এর আগে বিবিসি ইউক্রেন জানিয়েছিল যে, খেরসন বিমানবন্দরের কাছে শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। খেরসনের আঞ্চলিক প্রশাসনও জানিয়েছে যে, রুশ সেনারা শহরটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে, তবে এখনও দখল নেয়নি।
এছাড়া শহরের প্রবেশ পথগুলোতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী চেকপোস্ট স্থাপন করেছে বলে জানিয়েছেন খেরসনের মেয়র।