আগেই সরিয়ে ফেলেছিল ইরান, কোন লাভ হলো না যুক্তরাষ্ট্রের হামলার

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইরান, জানানো হয়েছে—ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ চালানো হয়েছে। তবে হামলার আগেই এসব স্থাপনা থেকে তেজস্ক্রিয় উপকরণ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২২ জুন) সকালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান এই হামলায় অংশ নেয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের উপ-রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি বলেন, “আমরা আগেই ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো খালি করে ফেলেছিলাম। যদি ট্রাম্পের বক্তব্য সত্যও হয়, আমাদের বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”

ইস্পাহানের নিরাপত্তাবিষয়ক ডেপুটি গভর্নর আকবর সালেহি জানান, “নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।”

ফোরদোতেও হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইরান। দেশটির আধা-সরকারি তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানায়, কোম প্রদেশে অবস্থিত ফোরদো কেন্দ্রের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এই স্থাপনাটি বহুদিন ধরেই ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “আমরা ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে অত্যন্ত সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।”

তিনি আরও জানান, “ইরানের মাটির ২৬২ ফুট গভীরে অবস্থিত ফোরদোতে ভারী বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। হামলাকারী বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছে।”

এ হামলা এমন সময় ঘটল, যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ইসরায়েল সম্প্রতি ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামক একটি নজিরবিহীন হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। অপরদিকে, ইসরায়েল দাবি করছে, ইরানের হামলায় তাদেরও কয়েক ডজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর এটি ইরানের ভূখণ্ডে অন্যতম বড় হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *